চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে চলাচলের জায়গা দখল করে নকশা বর্হিঃভূত বহুতল নির্মাণ করছেন ভূমিদস্যু সিরাজুল ইসলাম। এ কাজে অদৃশ্যভাবে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত মিরসরাই পৌরসভার প্রশাসক এসিল্যান্ড প্রশান্ত চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ মিরসরাই পৌরসভার মোমিনটোলা ২নং ওয়ার্ড আব্দুল লতিফ সিকদার রোডের ভূক্তভোগী এলাকাবাসীর।

এসিল্যান্ড, ওসিকে চট্টগ্রাম আদালতের নির্দেশনা

নির্মাণ কাজ অব্যাহত থাকায় এলাকাবাসীর পক্ষে পূর্বের দায়েরকৃত মামলায় গত ১২ নভেম্বর বিজ্ঞ আদালতকে অবগত করলে আদালত দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য মিরসরাই পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক এসিল্যান্ডকে নির্দেশনা দেন। এসিল্যান্ড ও মিরসরাই থানার ওসি হতে প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করে ওই জায়গায় স্টে অর্ডার দেন। যার স্মারক নয় ১২০৮/২৪। ভবন নির্মাণ বন্ধে আদালতে স্ট্রে অর্ডার থাকলেও মিরসরাই পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক এসিল্যান্ড এর নীরবতার কারণে সিরাজুল ইসলাম অদ্যবদি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

চলাচলের রাস্তা উল্লেখ করে কাজ বন্ধ রাখতে সিরাজুল ইসলামকে মিরসরাই থানার নির্দেশনা

চলাচলের রাস্তায় ভবন নির্মানের কাজ বন্ধ রাখতে চলতি ২১ নভেম্বর মিরসরাই থানা প্রশাসন সিরাজুল ইসলামকে পাঠানো এক নোটিশে উল্লেখ করেন, তপশীলঃ মৌজা-পূর্ব মঘাদিয়া, জেএল নং -৭৩, বিএস ৬৯১৯ খতিয়ানের সামিল বিএস নামজারী ৬৯৯৫ নং খতিয়ানের বিএস ৪১১৯ দায়ের প্রার্থীকে কৃয়কৃত ৯.৬৬ শতক এর আন্দর নামজারীকৃত ০৬৯৭ শতাংশ সম্পত্তির সহিত লাগোয়া চলাচল রাস্তা যাহাতে প্রার্থীক ও অন্যান্য দাগের মালিক ও শরিকগন সহ সাধারণ চলাচলের জন্য ব্যবহার্য।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং মিরসরাই পৌরসভার প্রশাসক বরাবরে এলাকাবাসীর অভিযোগ

জানা গেছে, মিরসরাই পৌরসভার মোমিনটোলা ২নং ওয়ার্ড আব্দুল লতিফ সিকদার রোডের দক্ষিণ পার্শে ৩০-৪০টা পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে বিগত সরকারের পৌর মেয়রের সাথে যোগসাজশে নকশা বহির্ভূত বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ করেন সিরাজুল ইসলাম, পিতা-শেখ আহম্মেদ, স্থায়ী ঠিকানা: দুর্গাপুর ইউনিয়ন, থানা-জোরারগঞ্জ, উপজেলা-মিরসরাই, চট্টগ্রাম। পৌরসভা থেকে ২৮,০০ স্কয়ার ফিট অনুমোদন নিলেও চলাচলের রাস্তার জায়গা সহ ৪৫,০০ স্কয়ার ফিট দখল করে ভবন নির্মাণ করে আসছেন।

চলাচলে রাস্তা উন্মুক্ত রাখার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে চট্টগ্রাম আদালতে ১৪৭ ধারায় ৩৫৭/২০২৩ নং মামলা রাশেদুল বারী । বিজ্ঞ আদালত ওই জায়গায় ভবন নির্মাণের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পৌরসভা ও মিরসরাই থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিলেও সিরাজুল ইসলাম তৎকালীন মেয়রের সহযোগিতায় প্রভাব ঘাটিয়ে ও ঘুষলেনদেন করে প্রতিবেদন আটকে রাখেন। কিন্তু উল্টো তাকে মিথ্যা মামলায় দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। সরকার পতনের পর আবারও নির্মাণ কাজ শুরু করলে পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক ও এসিল্যান্ড, সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারকে অবগত করলে সাময়িক কাজ বন্ধ করে দেন। গত ২ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও লিখিত অভিযোগ দেয় এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ার সরেজমিনে এসে ঘটনার সত্যতা পেলে রহস্যজনক ভাবে পৌর কর্তৃপক্ষের অদৃশ্য সহযোগিতায় সিরাজুল ইসলাম আবারও নকশা বর্হিভূত ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন।

নকশা বর্হিভূত ভবন নির্মাণ স্থায়ীভাবে বন্ধ করে এলাকাবাসীর চলাচলের পথ উন্মুক্ত করে দেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।