নিজস্ব প্রতিবেদক ::
চট্টগ্রামে আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত মিরসরাই পৌরসভার প্রশাসক এসিল্যান্ড প্রশান্ত চক্রবর্তী। মিরসরাই পৌরসভার মোমিনটোলা ২নং ওয়ার্ড আব্দুল লতিফ সিকদার রোডের চলাচলের জায়গা দখল করে নকশা বর্হিঃভূত বহুতল ভবন নির্মাণ করায় ভূমিদস্যু সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিলেও (মামলা নং ৩৫৭/২৩) এসিল্যান্ড জমা দেননি। আদালতের স্টে অর্ডার থাকার পরও নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন সিরাজুল ইসলাম। রহস্যজনক কারণে এখন পর্যন্ত সিরাজুল ইসলামকে কোনো নোটিশ জারি করেনি পৌর কর্তৃপক্ষ।
নির্মাণ কাজ অব্যাহত থাকায় এলাকাবাসীর পক্ষে দায়েরকৃত মামলায় গত ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে শুণানী হয়। অদ্যবদী প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেননি এসিল্যান্ড। এদিন মহামান্য আদালত আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার জন্য আবারও স্টে অর্ডার দেয়। যার স্মারক নং ১৩০১/২৪। এর আগেও ১২নভেম্বরের শুনানীতে ধার্য তারিখ গত ২৬ নভেম্বরের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা হাকিম আদালত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত মিরসরাই পৌরসভার প্রশাসক এসিল্যান্ড প্রশান্ত চক্রবতী জমা দেননি। নির্দেশনার স্মারক নয় ১২০৮/২৪।
চলাচলের পথ বন্ধ করে ভবণ নির্মাণে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও মিরসরাই পৌরসভা কর্তৃপক্ষের অদৃশ্য সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছেন ভূমিদস্যু সিরাজুল ইসলাম। এতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। এমন পরিস্থিতি যে কোন ধরণের রক্ষক্ষয়ী সংর্ঘষ ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
চলাচলের রাস্তায় ভবন নির্মানের কাজ বন্ধ রাখতে চলতি ২১ নভেম্বর মিরসরাই থানা প্রশাসন সিরাজুল ইসলামকে পাঠানো এক নোটিশে উল্লেখ করেন, তপশীলঃ মৌজা-পূর্ব মঘাদিয়া, জেএল নং -৭৩, বিএস ৬৯১৯ খতিয়ানের সামিল বিএস নামজারী ৬৯৯৫ নং খতিয়ানের বিএস ৪১১৯ দায়ের প্রার্থীকে কৃয়কৃত ৯.৬৬ শতক এর আন্দর নামজারীকৃত ৯.৬৬ শতাংশ সম্পত্তির সহিত লাগোয়া চলাচল রাস্তা যাহাতে প্রার্থীক ও অন্যান্য দাগের মালিক ও শরিকগন সহ সাধারণ চলাচলের জন্য ব্যবহার্য।
জানা গেছে, মিরসরাই পৌরসভার মোমিনটোলা ২নং ওয়ার্ড আব্দুল লতিফ সিকদার রোডের দক্ষিণ পার্শে ৩০-৪০টা পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে বিগত সরকারের পৌর মেয়রের সাথে যোগসাজশে নকশা বহির্ভূত বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ করেন সিরাজুল ইসলাম, পিতা-শেখ আহম্মেদ, স্থায়ী ঠিকানা: দুর্গাপুর ইউনিয়ন, থানা-জোরারগঞ্জ, উপজেলা-মিরসরাই, চট্টগ্রাম। পৌরসভা থেকে ২৮,০০ স্কয়ার ফিট অনুমোদন নিলেও চলাচলের রাস্তার জায়গা সহ ৪৫,০০ স্কয়ার ফিট দখল করে ভবন নির্মাণ করে আসছেন।
চলাচলে রাস্তা উন্মুক্ত রাখার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে চট্টগ্রাম আদালতে ১৪৭ ধারায় ৩৫৭/২০২৩ নং মামলা রাশেদুল বারী । বিজ্ঞ আদালত ওই জায়গায় ভবন নির্মাণের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পৌরসভা ও মিরসরাই থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিলেও সিরাজুল ইসলাম তৎকালীন মেয়রের সহযোগিতায় প্রভাব ঘাটিয়ে ও ঘুষলেনদেন করে প্রতিবেদন আটকে রাখেন। কিন্তু উল্টো তাকে মিথ্যা মামলায় দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করা হয়।
সরকার পতনের পর আবারও নির্মাণ কাজ শুরু করলে পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক ও এসিল্যান্ড, সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারকে অবগত করলে সাময়িক কাজ বন্ধ করে দেন। গত ২ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও লিখিত অভিযোগ দেয় এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ার সরেজমিনে এসে ঘটনার সত্যতা পেলে রহস্যজনক ভাবে পৌর কর্তৃপক্ষের অদৃশ্য সহযোগিতায় সিরাজুল ইসলাম আবারও নকশা বর্হিভূত ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
নকশা বর্হিভূত ভবন নির্মাণ স্থায়ীভাবে বন্ধ করে এলাকাবাসীর চলাচলের পথ উন্মুক্ত করে দেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।