ইলিয়াছ রিপন, চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রামে একটি বিশ্বমানের কাস্টমস ও আধুনিক স্বয়ংসম্পূর্ণ রাসায়নিক পরীক্ষাগার নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুর যেখানে শুধু বন্দরকে ব্যবহার করে ব্যবসা ও অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে অনেক এগিয়ে গেছে, তেমনি আমরা যদি আমাদের সমুদ্রকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলে অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব। ভ্যাট ও ট্যাক্স সিস্টেমকে পুরোপুরি ফাংশনাল করতে না পারলে যথাযথভাবে রাজস্ব আসবে না। সরকারের দরকার রাজস্ব, আর ব্যবসায়ীদের দরকার স্বাচ্ছন্দে ব্যবসা করা। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। গুটিকয়েক দুর্নীতিবাজদের জন্য কেন সবাই ভুক্তভোগী হবে। দুর্নীতিবাজদের সকলে মিলে প্রতিহত করলে দেশ সোনার বাংলাদেশ হবে। আমাদের প্রতিটি কাজে দেশের স্বার্থ চিন্তা করতে হবে। কারণ দেশ সবার।

১০ এপ্রিল চট্টগ্রাম কাস্টমস্ এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের সাথে আগ্রাবাদস্থ এসোসিয়েশন কার্যালয়ে প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় অভ্যন্তণীর সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ আবদুর রহমান খান উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন। তিনি এসোসিয়েশনের বাজেট প্রস্তাবনার ভুয়সী প্রশংসা করে বলেন, পণ্যের শ্রেনীবিন্যাসে অসংগতি ও শুল্ক ফাঁকির বিষয়গুলো বাজেট প্রস্তাবনায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি যৌক্তিক প্রস্তাবনা সমূহ ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করা এবং কাস্টমস এজেন্ট লাইসেন্সিং বিধিমালা সংশোধনের প্রস্তাবনা সমূহ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক কাস্টম হাউস ও কাস্টম ষ্টেশনে কাজ করার জন্য পৃথক লাইসেন্স ইস্যু না করে একই সিএন্ডএফ লাইসেন্স দিয়ে যাতে সকল কাস্টম হাউস ও ষ্টেশনে কাজ করা যায় তার জন্য লাইসেন্সিং সিস্টেমকে অটোমেটেড করা হবে। কাস্টমস এজেন্টদের কাজগুলো টেকনিক্যাল, তাই কাস্টমস এজেন্টদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির উপর জোড় দিতে হবে। সঠিকভাবে রাজস্ব আহরণ ও রাজস্ব সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য অন্যায়-অনিয়মকে প্রশ্রয় না দিয়ে কাস্টমস এজেন্টদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস্ এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ নুরুল আবছারের সভাপতিত্বে ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোঃ শফিউল আজম খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় বাজেট প্রস্তাবনা উপস্থান করেন সাধারণ সম্পাদক মোঃ শওকত আলী। তিনি কাস্টমস এজেন্ট লাইসেন্সিং বিধিমালার সিএন্ডএফ পেশা স্বার্থ বিরোধী কালো বিধি সমূহ বাতিল, সিএন্ডএফ কমিশনের উপর উৎসে কর্তিত করের হার হ্রাস করা ও কর্তিত আয়করকে চূড়ান্ত করদায় হিসাবে বিবেচনা করা, আমদানি পণ্যের শ্রেণীবিন্যাসে অসংগতি সহ শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও রাজস্ব আহরণ ত্বরান্বিত করার বিষয়ে এক গুচ্ছ প্রস্তাবনা বই আকাওে এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর উপস্থাপন করেন। সভায় কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম এর কমিশনার মোঃ জাকির হোসেন বলেন, কাস্টমস এজেন্ট রাজস্ব আহরণের প্রধান চালিকা শক্তি। তাঁরা কাস্টমস ও বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের বিশাল কর্মযজ্ঞে কাস্টমস এর অন্যতম সহযোগি।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট এর কমিশনার, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এর কমিশনার, কর অঞ্চল সমূহের কর কমিশনারবৃন্দ, কর (আপীল) এর কমিশনার, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপীলাত ট্রাইবুনাল এর কমিশনার সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা পরিষদ ও কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।