নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:
চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লাহস্থ জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের নতুন কমিটি দায়িত্ব নেয়ার পর হাসপাতালের আর্থিক ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলায় পরিবর্তন আসে। রোগী ও স্বজনদের মতামত অনুযায়ী, সেবার মান উন্নত হয়েছে। এর ফলে কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু হয়। দীর্ঘদিনের অনিয়ম জবাবদিহীতার মধ্যে মুখে পড়ে।
গত ১৮ মে জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠিত হয়। প্রখ্যাত চিকিৎসক এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ইমরান বিন ইউনুস এতে চেয়ারপার্সন হন, ভাইস চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব নেন মনিরুল ইসলাম ইউসুফ এবং সদস্য সচিব হন হাসপাতালের ইনচার্জ আলাউদ্দিন পাটোয়ারী।
চট্টগ্রাম জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়; উভয় প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাঠামো ও দায়িত্ব পৃথক।
বিশ্বস্ত সূত্রমতে, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার নতুন কমিটি যাতে কাজ করতে না পারে, সেই উদ্দেশ্যে রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট কমিটি ও হাসপাতালের অনিয়মের সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা কর্মচারী সংঘবদ্ধভাবে পরিকল্পিতভাবে বহিরাগতদের ব্যবহার করে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। তাদের লক্ষ্য ছিল, এই বিশৃঙ্খলার আড়ালে কমিটি বাতিল করার চাপ সৃষ্টি করা।
সূত্র জানায়, ৩০ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ১১ সদস্যবিশিষ্ট অ্যাডহক কমিটি গঠিত হয়। এতে জেলা পরিষদের প্রশাসক চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান, ভাইস চেয়ারম্যান হন মনিরুল ইসলাম ইউসুফ এবং সেক্রেটারি হিসেবে আসেন আব্দুল আউয়াল চৌধুরী।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সেক্রেটারি আব্দুল আউয়াল চৌধুরীর বিরুদ্ধে হাসপাতালের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। ১৩ জুলাই আয়োজিত হাসপাতাল ব্যবস্থাপনাা কমিটির প্রথম সভায় বিষয়টি উত্থাপিত হলে, কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতালের কোনো সম্পদ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া, পূর্বে বরখাস্ত হওয়া চিফ অ্যাডমিন অফিসার আশরাফ উল্লাহ সুজনকে পুনর্বহালের জন্য নানা মহলে তদবির চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠে।
সেদিন এক ভাইরাল ঘটনার চিত্রায়ন হয়। এক যুবকের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ‘ভাইরাল’ হলে ব্যাপক আলোড়নের সৃষ্টি হয়। তবে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত—উদ্দেশ্য ছিল বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটিকে বিতর্কিত করা।
বিশ্লেষকদের মতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ঘটনাটি ছিল একটি ধোঁয়াশা সৃষ্টি করার অপকৌশল। উদ্দেশ্য ছিল নতুন কমিটির গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করা। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা আনার কারণে কিছু স্বার্থানেষী মহলের সুবিধা বিঘিœত হওয়ায়, তারা এভাবে প্রতিশোধ নিয়েছে।
চট্টগ্রামবাসীর প্রত্যাশা, জনস্বাস্থ্যসেবার এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে যেন কোনো অশুভ প্রভাব না পড়ে এবং সুশাসনের ধারা অব্যাহত থাকে।