চট্টগ্রাম অফিস ॥
সরকার পরিচালিত প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন (কেজি) স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা সরকারকে এই ‘বৈষম্যমূলক ও অন্যায্য’ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
চট্টগ্রামে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ পদযাত্রায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও ঐক্য পরিষদের নেতা অধ্যাপক এ.কে.এম. নূরুল বশর সুজন। তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কেজি শিক্ষার্থীদের পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেন।
অধ্যাপক সুজন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে আসছে। এসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা অতীতে পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি ও সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সফলতার পরিচয় দিয়েছে।”
“কিন্তু গত ৫ আগস্ট এক প্রশাসনিক পরিবর্তনের পর হঠাৎ করেই মন্ত্রণালয় কেজি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এটি পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।”
তিনি আরও বলেন, “যদি সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে, তাহলে কেজি শিক্ষার্থীরা পারবে না কেন? একই দেশে শিশুদের জন্য দুই রকম আইন চলতে পারে না।”
বৈষম্যের অভিযোগ
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক লায়ন লুভনা হুমায়ুন সুমী এবং সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় সভাপতি লায়ন মোহাম্মদ কবিরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিকেএ কেন্দ্রীয় সদস্য মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী ও এম.এ. মতিন, অর্থ সম্পাদক নূরুল আবছার, প্রচার সম্পাদক সুপলাল বড়ুয়া, সদস্য শিউলি বড়ুয়া এবং বিভিন্ন স্কুলের পরিচালক ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা খাতে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর ভূমিকা অনন্য।
তারা বলেন, “কেজি স্কুলগুলো শিশুদের কথা বলা শেখানো থেকে শুরু করে তাদের নৈতিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি স্কুলের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং সহায়ক।”
বেসরকারি শিক্ষাকে বিতর্কিত করার চক্রান্ত?
সভাপতি লায়ন মো. কবিরুল ইসলাম বলেন, “সরকারি অনুদান না পেয়েও কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো ভালো ফলাফল করে আসছে। কিছু কর্মকর্তা এই সফলতা হজম করতে না পেরে কেজি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত করতে চক্রান্ত করছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কিছু কর্মকর্তা সরকারকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করছে, যা কখনোই কাম্য নয়।”
বক্তারা অবিলম্বে এই নির্দেশনা প্রত্যাহার করে সকল শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান — যেন শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের ধরন নির্বিশেষে সমানভাবে শিক্ষাগত অগ্রগতির সুযোগ পায়।