চট্টগ্রাম প্রতিনিধি::
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মোহাম্মদীয়া খানকাহ শরীফে চলছে ১২ দিনব্যাপী মহান পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিশেষ মিলাদ মাহফিল। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর মিলাদ, দরূদ শরীফ পাঠ, আলোচনা ও দোয়ার মধ্য দিয়ে নবীপ্রেমিকদের উপস্থিতিতে সরব হয়ে উঠছে খানকাহ শরীফ প্রাঙ্গণ।
এই আয়োজনে মূল নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোহাম্মদীয়া খানকাহ শরীফের প্রধান খাদেম আশেকে রাসূল মুহাম্মদ কামরুল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই খানকাহর ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রমকে গতিশীল রাখছেন। তাঁর নেতৃত্বেই খুলশী জালালাবাদ এলাকায় এবারই প্রথম পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ১২ দিনব্যাপী এই বিশেষ মাহফিল আয়োজন করা হয়, যেখানে ধর্মপ্রাণ মানুষ নবীজির ভালোবাসায় একত্রিত হন।
৫ম দিনের আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন আশেকে রাসূল মুহাম্মদ কামরুল। তিনি বলেন—
“মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনই মানবজাতির মুক্তির দিশারী। তাঁর শিক্ষা ও আদর্শ আমাদের জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য যথেষ্ট। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সত্য-ন্যায়ের প্রসারে নবীজির আদর্শ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ৩১তম আওলাদে রাসূল (সা.), নায়েবে সাজ্জাদানশীন দপ্তরে গাউসুল আযম, শাহজাদা সৈয়দ মারুফ বিন কাদের মাইজভান্ডারী (মাদ্দাজিল্লুউল আলী)। তিনি নবীজির মানবকল্যাণমূলক কর্ম ও সমাজ সংস্কারের দিকগুলো তুলে ধরেন।
বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সীতাকুণ্ড উপজেলা মডেল মসজিদের খতীব মাওলানা মোঃ মনজুর আলম এবং কল্পলোক মডেল মসজিদের খতীব আবু আহাম্মদ আযহারী।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এডভোকেট মীর মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম সেলিম।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মুফতী সালেহ সুফিয়ান মাইজভান্ডারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রুস্তম আলী, মাওলানা মনছুরুল হক, মোঃ মোছাদ্দেক মোরশেদ, সাইফুল ইসলাম সোহাসসহ অসংখ্য আশেকে রাসূল ও স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মানুষ।
আশেকে রাসূল মুহাম্মদ কামরুলের উদ্যোগ ও অঙ্গীকার
ধর্মীয় দায়িত্বশীল একজন খাদেম হিসেবে আশেকে রাসূল মুহাম্মদ কামরুল শুধু মাহফিল আয়োজনেই সীমাবদ্ধ নন; বরং তিনি সমাজে নবীপ্রেম জাগ্রত করা, তরুণ প্রজন্মকে নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়া এবং ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার পরিবেশ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করছেন।
তিনি বলেন—“আমরা চাই নবীজির জন্মদিনকে কেন্দ্র করে সমাজে সত্য, সৌন্দর্য ও মানবতার আলো ছড়িয়ে দিতে। মিলাদুন্নবী (সা.) শুধু উৎসব নয়, এটি আমাদের আত্মশুদ্ধির অঙ্গীকার।”
ঐতিহ্যের ধারক
মোহাম্মদীয়া খানকাহ শরীফের দীর্ঘ আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আশেকে রাসূল মুহাম্মদ কামরুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তাঁর নেতৃত্বে এ খানকাহ আজ শুধু একটি ধর্মীয় কেন্দ্র নয়, বরং সমাজে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও মানবসেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
১২ দিনব্যাপী মাহফিলের প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক আশেকে রাসূলের সমাবেশে খানকাহ শরীফ পরিণত হচ্ছে আধ্যাত্মিক উৎসবে। শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হবে আখেরি মোনাজাত ও তবারুক বিতরণ।