চট্টগ্রাম অফিস ॥
চট্টগ্রামের পশ্চিম খুলশী জালালাবাদস্থ মোহাম্মদীয়া খানকাহ শরীফে চলছে ১২ দিনব্যাপী পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। এর ধারাবাহিকতায় গত ৩১ আগস্ট, রবিবার মাহফিলের ষষ্ঠ দিনের আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী দুটি ভিন্ন স্থানে পৃথক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এই আয়োজন সম্পন্ন হয়।
দুপুরে নগরীর রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অনুষ্ঠিত হয় দোয়া, মোনাজাত ও আলোচনা সভা। এতে অংশ নেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি-ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসানুল হাদী। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মোহাম্মদীয়া খানকাহ শরীফের প্রধান খাদেম আশেকে রাসূল মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ ড. কামাল উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক পূর্বদেশের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক আবছার মাহফুজ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এডভোকেট মীর মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম সেলিম।দোয়া মোনাজাত করেন মুফতী সালেহ সুফিয়ান মাইজভান্ডারী।
প্রধান অতিথি ড. আহসানুল হাদী বলেন, নবী করিম (সা.)-এর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন—“আল্লাহর প্রেরিত শেষ নবী (সা.) মানবতার মুক্তির দিশারী। তাঁর আদর্শ সমাজে প্রতিষ্ঠিত হলে ন্যায়, শান্তি ও সাম্য কায়েম হবে।”
আলোচনা সভার আগে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, হামদ-না’ত পরিবেশিত হয়। শেষে ছাত্র-শিক্ষকদের অংশগ্রহণে মিলাদ ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
সন্ধ্যা থেকেই আশেকে রাসূলগণ সমবেত হতে শুরু করেন। প্রাঙ্গণ ভরে ওঠে হামদ-না’ত, দরূদ শরীফের আবহে। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি-ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসানুল হাদী। তিনি বলেন, “নবী করিম (সা.) ছিলেন মানবতার সর্বশ্রেষ্ঠ রোল মডেল। আজকের প্রজন্ম যদি তাঁর জীবনাদর্শ ও সুন্নাহ অনুসরণ করে, তবে নৈতিক অবক্ষয় রোধ হবে, সমাজে ফিরে আসবে শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব।”
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদীয়া খানকাহ শরীফের প্রধান খাদেম আশেকে রাসূল মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “রাসূলের প্রেমে আত্মনিবেদনই আমাদের জীবনের মূল লক্ষ্য। এ মাহফিল সমাজে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও সত্য প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এডভোকেট মীর মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম সেলিম।
বিশেষ বক্তাদের অংশগ্রহণ
বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পর্যটন ও হোটেল ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রশিক্ষক ও পরিচালক মুফতি মুহাম্মদ মাসউদ রিজভী এবং কুলগাঁও গাউসিয়া আজিজিয়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ ফোরকান।
তাঁরা বলেন, “নবী করিম (সা.)-এর জন্ম আমাদের জন্য রহমত। তাঁর জীবনদর্শন ও দ্বীনের শিক্ষা সমাজে প্রতিষ্ঠিত করলে কলহ-বিবাদ দূর হয়ে মানবিক সমাজ গড়ে উঠবে।”
মাহফিলের সমাপ্তি
আলোচনা শেষে মিলাদ ও কিয়াম পরিচালনা করেন মাওলানা মনছুরুল হক। আশেকে রাসূলগণ সমবেত কণ্ঠে দরূদ পাঠ করেন। পরে দেশ, জাতি ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও ঐক্য কামনা করে বিশেষ দোয়া পরিচালিত হয়। মোনাজাত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি-ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসানুল হাদী।
ষষ্ঠ দিনের এই আয়োজনকে ঘিরে খানকাহ শরীফে এক আধ্যাত্মিক আবহ সৃষ্টি হয়। ধর্মপ্রাণ মানুষের উপস্থিতি ও নবী করিম (সা.)-এর জীবনাদর্শ অনুসরণের অঙ্গীকার অনুষ্ঠানটিকে আরও তাৎপর্যমণ্ডিত করে তোলে।
উপস্থিত ছিলেন সাইফুল ইসলাম সোহাস, মিঠু, রবিউল প্রমুখ।